আমরা এই সময়ে করোনার আতঙ্কের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। একই সঙ্গে আমরা বাংলাদেশে ভয়াবহ আম্পান ঝড়ের মোকাবেলা করলাম। করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে আমরা আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ। আমরা চিন্তা করছি আমাদের সন্তানদের পড়াশোনার কি হবে! স্কুল কলেজ বন্ধ, পরীক্ষাগুলো হচ্ছে না, তাদের এই শিক্ষাবর্ষটা কেমন যাবে? আদৌ যে সমস্যাগুলোর মধ্য দিয়ে তারা যাচ্ছে তার উন্নতি হবে কিনা! একই সাথে আমরা আমাদের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ। আমরা চিন্তা করছি করোনা পরিস্থিতি কতোদিন এই পৃথিবীতে থাকবে? এবং এই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের পরিবারের খরচগুলো আয় করব? আমাদের কাজ নেই, আমরা ঘর থেকে বাইরে যেতে পারছি না, আমাদের চারিদিক বন্ধ হয়ে গেছে। এবং একে একে আমরা এমন এক পর্যায়ে এসে দাড়িয়েছি যে, কবে আমাদের মনে হচ্ছে এই কষ্টের শেষ আসবে! আমাদের সম্পুর্ণ জীবনটাই যেন এক অশান্তির মধ্যে নিমজ্বিত হয়েছে।
কিন্তু প্রিয় সুধিজনেরা, প্রভু যীশু খ্রীষ্ট যোহন ১৪ অধ্যায় ২৭ পদে স্পষ্ট বলেছেন “আমি তোমাদের জন্য শান্তি রেখে যাচ্ছি, আমারই শান্তি আমি তোমাদের দিচ্ছি; জগৎ যেভাবে দেয় আমি সেইভাবে দিই না। তোমাদের মন যেন অস্থির না হয় এবং মনে ভয়ও না থাকে।”
প্রভু যীশু খ্রীষ্ট তাঁর শান্তি আমাদের কাছে দান করে গেছেন। কিন্তু এই বিরূপ পরিবেশের মধ্যে আমরা সেই শান্তিকে উপলব্ধি করতে পারছি না। তার অন্যতম একটা কারণ হতে পারে, আমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে ঠিক সেইভাবে বুঝতে পারছি না, যেভাবে তিনি তাঁর শান্তি দান করেছেন।
মথি তার ৬ অধ্যায় ৩৪ পদে স্পষ্টভাবে তিনি বলেছেন, “কালকের চিন্তা কালকের উপর ছেড়ে দাও। দিনের কষ্ট দিনের জন্য যথেষ্ট”। তাই আজকে আমরা যে দিনগুলো পার করছি, সেখানে করোনার ভয়াবহতা রয়েছে, সেখানে সাইক্লোনের ভয়াবহতা রয়েছে। কিন্তু এই দিনের কষ্টগুলো তিনি আমাদের জীবনে অনুমোদন দিয়েছেন। যেন আমরা এগুলো সহ্য করার মধ্য দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে জেতে পারি। এবং যদিও সেখানে মৃত্যু রয়েছে, যন্ত্রনা রয়েছে, ভয় রয়েছে, কষ্ট রয়েছে। কিন্তু সেগুলোকে পার হয়ে, আমাদেরকে প্রভুর আলোর কাছে পৌছাতে হবে। কারণ আপনাকে আমাকে এই দিনগুলোর জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। যেন আমরা এই দিনের কষ্টগুলোকে সহ্য করি।
খ্রীষ্টেতে সুধিজনেরা, যদি এই দিনগুলোকে আপনি সহ্য করতে না পারেন। যদি এই দিনগুলোকে আপনি বিশ্বাসের সংগে প্রভুতে নির্ভর করতে না পারেন। তাহলে যদি এখনই যীশুর আগমন হয়, তাহলে সেই সময়ে যে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি, যে কষ্ট, যন্ত্রনা, যে অত্যাচার আসবে সেগুলোকে আপনি কিভাবে সহ্য করবেন?
বাংলা খ্রীষ্টিয়ান গানের একটি কলি আমার খুব ভাল লাগে, “যখন হয় শূণ্য দুই হাত, দুঃখের রাত হয়না প্রভাত, তুমি উর্ধে তুলে সেই শূণ্যহাত বলো জয় জয়, ধন্য যীশু“। এই গানের লেখক তার হৃদয়ের আবেগ মিশিয়ে এবং অন্তরের গভীর থেকে প্রভুর প্রতি তার কৃতজ্ঞতা তুলে এনেছেন। যদি দুই হাত শূণ্য হয়, যদি দুঃখের রাত শেষ না হয়, তবুই তুমি প্রভু যীশুকে ধন্যবাদ দাও।
খ্রীষ্টেতে সুধিজন, প্রভু যীশু আমাদের কাছে সেইরকম জীবন চান। আপনি যদি প্রভুর কাছে সেইরকম জীবন নিয়ে না আসতে পারেন, আপনি যদি প্রতিদিনের কষ্টগুলোকে হাসিমুখে গ্রহণ করতে না পারেন। আপনার জন্য নির্ধারিত কষ্টগুলোকে ভোগ করার মধ্য দিয়ে প্রভুকে কৃতজ্ঞতা জানাতে না পারেন। তাহলে প্রভু আপনার জীবনে নির্ভরতা কোথায় দেখতে পাবেন?
———-
ঈশ্বর আমাদের ভয়ের মনোভাব দেন নি; তিনি আমাদের এমন মনোভাব দিয়েছেন যার মধ্যে শক্তি, ভালবাসা ও নিজেকে দমনে রাখবার ক্ষমতা রয়েছে। ২ তীমথিয় ১:৭
তোমরা শক্ত হও ও মনে সাহস আন। তাদের দেখে তোমরা ভয় পেয়ো না কিম্বা কেঁপে উঠো না, কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুই তোমাদের সংগে যাবেন। তিনি কখনও তোমাদের ছেড়ে যাবেন না বা ত্যাগ করবেন না। দ্বিতীয় বিবরণ ৩১:৬